বিগত বছর থেকেই গোটা পৃথিবী জুড়ে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে করোনা ভাইরাস। ক্ষতিকর এই ভাইরাসের প্রভাবে থমকে গেছিল গোটা পৃথিবী। তবে ধীরে ধীরে মানুষ এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার অস্ত্র আবিস্কার করতে সক্ষম হয়েছে। আবিস্কার হয়েছে করোনার প্রতিষেধক। গোটা বিশ্বের তাবড় তাবড় চিকিৎসক বৈজ্ঞানিকরা দাবি করছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনার সঙ্গে লড়াই করার একমাত্র হাতিয়ার হলো দ্রুত টিকাকরণ। ভারতও পিছিয়ে নেই। সম্পুর্ন দেশীয় প্রযুক্তিতে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন টিকা ইতিমধ্যেই দেশের মানুষকে প্রদান করা শুরু হয়ে গেছে।
তবে টিকা প্রদান শুরু হওয়ার সাথে সাথেই ছড়িয়েছে নানাধরনের গুজব। তার মধ্যে একটি হল, করোনার ভ্যাকসিন নিলে মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব রোগ হতে পারে এবং গর্ভবতী মহিলাদের এই প্রতিষেধক নেওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
তবে এ যে নিতান্তই গুজব সেবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের প্রধান বলরাম ভার্গব দাবি করেছেন করোনার প্রতিষেধক নিলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোন ভয় নেই। কিছু মানুষের এলার্জি বা অন্য কোন সমস্যা থাকলে সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যা দেখা দিলেও তা খুব একটা চিন্তার কিছু নয়। করোনার প্রতিষেধক নিলে বন্ধ্যাত্ব হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এবং গর্ভবতী মহিলারাও নিতে পারেন এই টাকা।
শুধু করোনা বলে নয়, এর আগে পোলিওর টিকার ক্ষেত্রেও এভাবে ভ্যাকসিন বিরোধী গুজব ছড়িয়ে গেছিল দেশজুড়ে। তখনও গুজব রটেছিল পোলিওর টিকা নিলে বন্ধ্যাত্ব রোগ দেখা যাবে মেয়েদের তবে সেই গুজব যে সম্পুর্ন ভিত্তিহীন সেকথা প্রমাণ গিয়েই গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বছরের শেষের মধ্যে দেশের সকল নাগরিককে টিকা দিতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র। তবে টিকাকরণ নিয়েই নতুন করে দানা বাঁধতে শুরু করেছে বিতর্ক। নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন এই বছরের শেষে মোট ২১৬ কোটি টিকার ডোজ মজুত থাকবে দেশে। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র হিসেব দিয়েছে ১৩৫ কোটি টাকার ফলে অতিরিক্ত ৮১ কোটি টিকা কোথায় গেল প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
এই মুহূর্তে ভারতে নিজের তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড ছাড়াও রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকাটি ছাড়পত্র পেয়েছে। তবে আগামী মাস থেকে জনসন কোম্পানির টিকাও চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের সাথে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছে গোটা দেশ তবে খুশির খবর এই যে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।